আউটসোর্সিং কি ?
Outsourcing শব্দটি নিয়ে ইদানিং অনেক আলোচনা হলেও এসম্পর্কে অনেকে নিশ্চিত নন বিষয়টি আসলে কি ? সাধারনভাবে মনে করা হয় এর পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট কাজ একে অন্যের কাছে করিয়ে নেন। বাস্তবে এই ব্যবস্থার পরিবর্তণ হচ্ছে। আগামীতে আরো হবে।
কোন
কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান
তাদের কাজ করার জন্য প্রয়োজন হিসেব করে লোক নিয়োগ দেবেন এটাই স্বাভাবিক। যেমন ধরুণ কোন প্রতিস্ঠানের একটি
কাষ্টমাইজ সফটঅয়্যার তৈরী করা
প্রয়োজন। সেই প্রতিস্ঠান সেই
কাজের উপযোগি প্রোগ্রামার খোজ করতে পারেন। কাজ অনুযায়ী একজন কিংবা
বহুজন। কিন্তু এই পদ্ধতির সমস্যা হচ্ছে, সবচেয়ে দক্ষ প্রোগ্রামার পাওয়া যাবে এমন কথা নেই, প্রোগ্রামারদের জন্য মাসিক বেতন দিলে বিপুল পরিমান অর্থ
ব্যয় করতে হয়, নির্দিষ্ট কাজ শেষে
তাদের করানোর মত কাজ নাও থাকতে পারে। এককথায় লোক নিয়োগ দিলে
একদিকে দক্ষতার সমস্যা অন্যদিকে খরচ বৃদ্ধি।
এর সমাধান হতে পারে
আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে। তারা কাজটি এমন কাউকে
(ব্যক্তি বা প্রতিস্ঠান) দেবেন যারা
কাজটি করে দেবে। যদি ইন্টারনেটভিত্তিক
কাজ হয় তাহলে সারা বিশ্বের যে
কোন যায়গা থেকে দক্ষ ব্যক্তি যেমন পাওয়া যাবে তেমনি প্রতিযোগিতামুলক খরচে করা যাবে। এটাই Outsourcing। আপনার যে লোকবল নেই সেই লোকবল বাইরে থেকে ব্যবহার করা।
আপনি কিভাবে এতে অংশ নিতে পারেন ?
আপনি
আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী
কাজ খুজতে পারেন। যারা আউটসোর্সিং এর
মাধ্যমে কাজ করান তারা ইন্টারনেটের
মাধ্যমে তাদের কাজের কথা জানান। আপনি সেই কাজ করার আগ্রহ
দেখাতে পারেন। তারমানে নিজের যোগ্যতা, অভিজ্ঞা, লোকবল এবং অন্যান্য যা কিছু প্রয়োজন এগুলি থাকলে সেটা উল্লেখ করে
কত খরচে, কত সময়ে কাজটি করে দিতে পারেন জানাবেন। তারা সন্তুষ্ট হলে আপনি কাজ পাবেন। সাধারণত Outsourcing এর জন্য প্রতিষ্ঠান বা কয়েকজনের দল প্রয়োজন হয়
যেখানে বিভিন্ন ধরনের দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি
থাকেন।
ব্যবহারিক
দৃষ্টিতে দেখা যাক। কর্মী হিসেবে আপনি
চাকরী বা কাজের জন্য খোজ করবেন কোন
কোম্পানী। আপনি ক্রাউডসোর্সিং
কোম্পানীর মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে জানিয়ে দিলেন আপনার যোগ্যতা,
অভিজ্ঞতা, আপনি কোন ধরনের কাজ করতে চান এসব তথ্য। বিশ্বের
যে কোন জায়গার যে কোন
কোম্পানীর যদি প্রয়োজন হয় আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
অথবা
ব্যবসা বা কোম্পানীর
পক্ষ থেকে আপনার প্রয়োজনীয় কর্মীর সংখ্যা এবং আপনি তাদের মাধ্যমে জানিয়ে
দিলেন আপনার কি কাজ প্রয়োজন, সেজন্য কত ব্যয় করতে
আগ্রহী। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছে পৌছে গেল সেই তথ্য। কোন কর্মী সেই কাজ করতে
আগ্রহি হলে আপনার সাথে যোগাযোগ
করবেন।
কর্মী
এবং কোম্পানী এই দুইয়ের
মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে নির্দিষ্ট কাজের ভিত্তিতে। সাধারণ
চাকরী থেকে বিষয়টি পৃথক। চাকরী করলে আপনি মাসে নির্দিষ্ট বেতন পাবেন, কাজ কতটা করলেন কিংবা
করলেন না তাতে কিছু যায় আসেনা। Outsourcing কাজের ক্ষেত্রে আপনার
নিয়োগ বা চুক্তি কাজ ভিত্তিক। আগেই ঠিক করা হবে কাজ কি, পারিশ্রমিক কত, সময় কত ইত্যাদি। দুপক্ষ সন্তুস্ট থাকলে সম্মতির ভিত্তিতে কাজ হবে।
Outsourcing এর মাধ্যমে কি করা যায়
ক্রাউডসোর্সিং ইন্টারনেটের
ওপর নির্ভর করে যোগাযোগ করে। কাজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেন করা যায় এমন যে কোন কাজই Outsourcing এর মাধ্যমে করা হয়। কোন
লেখালেখি, সফটঅয়্যার তৈরী,
ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড
করা, ডকুমেন্টারী বা মুভি তৈরী, গ্রাফিক ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি এধরনের কাজগুলি বেশি পরিচিত। এর বাইরে নানা ধরনের Outsourcing কোম্পানী
গড়ে উঠছে। এখানে কয়েকটির উদাহরন
দেয়া হচ্ছে;
বৃটেন ভিত্তিক ব্লার
গ্রুপ ডিজাইনার, রাইটার, মার্কেটার,
ফটোগ্রাফার, আর্টিষ্ট সকলকে নিয়ে কাজ করে। বিশেষ
কাজের জন্য দক্ষতা প্রয়োজন হলে সেটা বাড়ানোর ব্যবস্থা করে। বিভিন্ন
ধরানের কাজের মধ্যে
থেকে বাছাই করে নির্দিষ্ট ধরনের কাজ বা কর্মী খুজতে সাহায্য করে।
জিনিয়াস-রকেট ইন্টারনেট এবং
টিভির জন্য ভিডিও তৈরী
থেকে শুরু করে এনিমেশন এবং মোশন
গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করে। তারা তৈরী কাজগুলিকে
নিজের কাছে রাখে এবং সেখান
থেকে নির্মাতাদের
অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয়।
ফ্রিল্যান্সার এর নাম তুলনামুলক বেশি পরিচিত। গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব পেজ ডিজাইন, প্রোগ্রামিং,
রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি এসব কাজের জন্য Outsourcing এর
ব্যবস্থা করা ছাড়াও
তাদের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা আছে। আপনি একটি ডিজাইন কিংবা
ওয়েব টেম্পলেট বিক্রির জন্য তাদের সাইটে রাখতে পারেন। বিক্রি হলে
আপনি টাকা পাবেন।
ক্রাউডসোর্সিং বিষয়টি
তুলনামুলক নতুন এবং এর পেছনের কোম্পানীগুলি প্রতিনিয়ত এতে পরিবর্তন আনছে। নতুন নতুন ধারনা কাজে লাগাচ্ছে, নতুন সেবা যোগ করা হচ্ছে। কোম্পানী গুলিও
তাদের কর্মীর জন্য সরাসরি নিয়োগ দেয়ার বদলে নির্ভর করছেন এদের ওপর। একদিকে এরফলে নিজেদের প্রয়োজনমত সত্যিকারের দক্ষ কর্মী
পাওয়া সম্ভব হচ্ছে অন্যদিকে
যারা কর্মী তারা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন সারা বিশ্বে।
একসময় Outsourcing নির্দিষ্ট কাজ নির্ভর
ছিল। সেই অবস্থার পরিবর্তন
হচ্ছে। বিষয়টি পরিনত হচ্ছে
অনলাইন চাকরীতে।
মাইক্রোসফটের
নাম রাখার বিষয়ে একবার
বিল গেটস বলেছিলেন, “প্রথমে শুরু করার
সুবিধে হচ্ছে ইচ্ছেমত নাম বাগানো যায়”। Outsourcing বিষয়টি
এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। ভবিষ্যত কাজের পদ্ধতি নিশ্চিতভাবেই আরো বেশি Outsourcing নির্ভর হবে। আপনিও প্রথমে শুরু করার
সুবিধে নিতে পারেন এখনই।
No comments:
Post a Comment
Thank you for your good comment.